শাপলা আর শাপলা কলি এক নয়, এবং কারোর দাবি বা চাহিদার ভিত্তিতে নয়—নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিজস্ব সিদ্ধান্তেই ‘শাপলা কলি’ প্রতীকটি যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন,
“কোনো দলের বিবেচনায় নয়, কমিশনের সামগ্রিক মূল্যায়নের ভিত্তিতেই প্রতীকের তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। কিছু প্রতীক নিয়ে বিরূপ মতামত আসায় নতুন করে কিছু প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে, আবার কিছু বাদও দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন তালিকায় মোট ১১৯টি প্রতীক রয়েছে। এর মধ্যে ‘শাপলা কলি’সহ কয়েকটি নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে। এখানে নতুন বিতর্কের কোনো যৌক্তিক কারণ দেখি না।”
এর আগে নির্বাচন কমিশন ‘নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮’ সংশোধন করে নতুন প্রতীক তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করে। ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে ১৯৭২ সালের আর্টিকেল ৯৪ অনুসারে প্রতীক বরাদ্দের বিধান সংশোধন করা হয়।
নতুন তালিকায় ‘শাপলা কলি’ ছাড়াও যুক্ত হয়েছে আরও কয়েকটি প্রতীক, যেমন— আনারস, গাভি, ঘুড়ি, হাতঘড়ি, মোমবাতি, প্রজাপতি, কম্পিউটার, ফুলকপি, মোরগ ইত্যাদি। সংশোধনের পর তালিকাভুক্ত প্রতীকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৯টি।
প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত হওয়ার আগে থেকেই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ দাবি করে আসছিল। গত জুনে নিবন্ধন আবেদনের সময় দলটি ‘শাপলা’, ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’—এই তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করেছিল। পরে অন্য দুইটি থেকে সরে এসে শুধুমাত্র ‘শাপলা’ প্রতীকেই জোর দেয় এনসিপি।
তবে রাজনৈতিক দলের জন্য নির্ধারিত প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা’ না থাকায় ইসি বারবার তাদের আবেদন নাকচ করে দেয়। এর আগে নাগরিক ঐক্যও ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়েছিল, যা কমিশন খারিজ করেছিল।
গত ৭ অক্টোবর এনসিপি পুনরায় নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘শাপলা’ প্রতীকের সাতটি নমুনাচিত্র পাঠায়, কিন্তু সেটিও গৃহীত হয়নি। ইসি পাল্টা চিঠি দিয়ে জানায়, তালিকাভুক্ত প্রতীক থেকেই বেছে নিতে হবে।
প্রতীক পছন্দের শেষ তারিখ ছিল ১৯ অক্টোবর। সেদিনও এনসিপি জানায়, তারা ‘শাপলা’ ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক নেবে না।
অবশেষে আজ (৩০ অক্টোবর) প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
গত ২৭ অক্টোবর নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছিলেন,
“বিধিমালায় ‘শাপলা’ প্রতীক না থাকায় এনসিপিকে সেটি দেওয়ার সুযোগ নেই। কমিশন নিজস্ব বিবেচনায় প্রতীক নির্ধারণ করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: