[email protected] শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ কার্তিক ১৪৩২

বাতিল ইভিএম, ফিরল ‘না ভোট’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ৭:৪৫ পিএম

সংগৃহীত ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

নতুন সংশোধনীতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে—ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয়–সম্পদের বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫ চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনজুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন,

“আরপিওতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী হলো ইভিএম সংক্রান্ত বিধান বাতিল এবং ‘না ভোট’ পুনর্বহাল। কোনো নির্বাচনী আসনে কেবল একজন প্রার্থী থাকলে ভোটাররা তাকে ভোট না দেওয়ার সুযোগ পাবেন। ভোটাররা যদি ‘না ভোট’ দেন, তবে সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এই বিধান আনা হয়েছে।

নতুন সংশোধনীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

আরও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে—

  • প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
  • নির্বাচনী জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
  • রাজনৈতিক দলকে ৫০০ টাকার বেশি অনুদান দিতে হলে ব্যাংকিং চ্যানেল বাধ্যতামূলক, এবং অনুদানদাতার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
  • বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভোটার ও নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা ডাক ভোটে ভোট দিতে পারবেন।
  • ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
  • কোনো নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম হলে পুরো এলাকার ভোট বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
  • জোটের প্রার্থীদের প্রতীক ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনতে নতুন বিধান যোগ করা হয়েছে, যাতে ভোটাররা সহজে বুঝতে পারেন কোন দল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন।

আইন উপদেষ্টা জানান,

“প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন— নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক প্রার্থীর দেশি-বিদেশি সম্পদের পূর্ণ বিবরণ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে, যাতে জনগণ তাদের প্রার্থীদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন।”

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর