গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিচার না হলে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের প্রতি অবিচার করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্কের শেষ দিনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,
“আমি বিশ্বাস করেছিলাম, শেখ হাসিনা ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হবেন। কারণ, তিনি একসময় অন্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন—‘সাহস থাকলে বিচারের মুখোমুখি হোন।’ কিন্তু সেই সাহস তিনি নিজে দেখাতে পারেননি। যদি সত্যিই মন থেকে বলতেন, তাহলে আজ দেশের মাটিতে ফিরে এসে বিচারের সম্মুখীন হতেন।”
তিনি আরও বলেন,
“এই আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে আরও অগণিত মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে জাতি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ভীরু ও কাপুরুষ হিসেবে রয়ে যাবে।”
অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারকগণ বলেন,
“ন্যায়বিচার অবশ্যই নিশ্চিত হবে। দুই পক্ষই যেকোনো মূল্যে ন্যায়বিচার পাবে।”
বর্তমানে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শেষ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এরপরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য দিন ধার্য করবে।
এর আগে এই মামলায় জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ব্যক্তি, চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যে উঠে এসেছে জুলাই গণহত্যা, নৃশংসতা, এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুম-খুনসহ বিভিন্ন নির্যাতনের তথ্য।
এ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জুলাই-আগস্টের গণহত্যাকালে তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি ঘটনার পটভূমি, নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নকারীদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
প্রসিকিউশন পক্ষের দাবি, উপস্থাপিত সাক্ষ্য ও প্রমাণ বিশ্বের যেকোনো আদালতে এই অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
এসআর
মন্তব্য করুন: