জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের সংঘর্ষের ঘটনায় বহিরাগতরাই জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
তারা জানায়, কিছু বহিরাগত ব্যক্তি সেখানে অনুপ্রবেশ করে মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান, যাদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জনের পরিচয় ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন
বৈঠকে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই যোদ্ধাদের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মো. সোহাগ মাহমুদ। দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন— কামরুল হাসান, মো. আল-আমিন, মুস্তাঈন বিল্লাহ হাবিবী, হাসিবুল হাসান জিসান, মারুফা মায়া, আহাদুল ইসলাম, মাজেদুল হক শান্ত, মো. সাগর উদ্দিন, মো. দুলাল খান, মো. নাহিদুজ্জামান, ইমরান খান ও নুসরাত জাহান।
জুলাই যোদ্ধাদের দাবি
বৈঠকে জুলাই যোদ্ধারা কমিশনকে অবহিত করেন, স্বাস্থ্য কার্ড থাকা সত্ত্বেও গত কোরবানি ঈদের পর থেকে তারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা বিষয়টিকে অমানবিক ও দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করেন।
তারা আহত জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পক্ষ থেকে একটি লিখিত নির্দেশনা দেশের সব হাসপাতালে পাঠানোর দাবি জানান।
এছাড়া, জুলাই পরিবারের সদস্যদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ও প্রত্যেক যোদ্ধাকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) প্রদানের দাবি তোলেন তারা।
সংঘর্ষ প্রসঙ্গে বক্তব্য
বৈঠকে জুলাই যোদ্ধারা ১৭ অক্টোবরের সংসদ প্লাজায় সংঘর্ষের প্রসঙ্গও তোলেন।
তারা বলেন,
“ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা ঘটাতে যাইনি। কেবল নিজেদের ন্যায্য দাবিগুলো তুলে ধরতেই সেখানে গিয়েছিলাম।”
তাদের দাবি,
“সেই সময় কিছু বহিরাগত ব্যক্তি অনুপ্রবেশ করে মারামারি ও ভাঙচুরে লিপ্ত হয়। আমরা তাদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছি।”
জুলাই যোদ্ধারা ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া চারটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য কমিশনের সহায়তা কামনা করেন।
কমিশনের প্রতিশ্রুতি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়,
“জুলাই যোদ্ধাদের উপস্থাপিত সব দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে এবং তাদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।”
সংক্ষেপে:
জুলাই যোদ্ধারা সংসদ প্লাজায় সংঘর্ষের দায় বহিরাগতদের ওপর দিয়েছেন। তারা ২০–২৫ জনকে চিহ্নিত করার দাবি করে চিকিৎসা, আইনি সুরক্ষা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। কমিশন আশ্বাস দিয়েছে, তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: