রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
এখনো কেউ কেউ নিখোঁজ রয়েছেন। স্বজনরা দিশেহারা হয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে ছুটছেন, কেউ হারিয়েছেন ছেলে, কেউ ভাই, কেউ ভাগনি।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছেন উৎসুক জনতা ও নিখোঁজদের স্বজনরা। চারপাশে কান্না ও উৎকণ্ঠার ছাপ। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ভবনটি ঘিরে রেখেছে এবং কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিকেল ৫টার দিকে নতুনভাবে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স ভবনের ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়, যা স্বজনদের মধ্যে নতুন করে উৎকণ্ঠা ছড়ায়।
গেট বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা আটকা
গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করা রবিউল্লাহ (২০) এর খোঁজ পাচ্ছেন না তার পরিবার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা বলেন,
“ছেলেটা আমার বেঁচে আছে তো?”
রবিউল্লাহর বড় ভাই হাবিবুল্লাহ বলেন,
“আগুন লাগার পর নিচের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাই ৩য় ও ৪র্থ তলা থেকে কেউ বের হতে পারেনি। ওই দুই তলায় প্রায় ১০০ জন ছিলেন।”
অন্যদের অভিযোগও এই সঙ্গে মিলে যায়। নিপা নামের এক নারী জানান, তার বোনের ছেলে রবিন কারখানার তিন তলায় কাজ করতেন। আগুন লাগার পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
একইভাবে, ভাগনি মাহিরা খুঁজছেন মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমার ভাগনি তিন তলায় কাজ করছিল। আগুন লাগার পর থেকে ওর কোনো খবর নেই। সব জায়গায় খুঁজেছি, হাসপাতালেও খুঁজেছি—কোথাও পাইনি।”
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,
“এখন পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের সময় নিঃসৃত বিষাক্ত গ্যাসে তাদের মৃত্যু হয়েছে।”
উল্লেখ্য, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। উদ্ধারকাজ চলমান।
এসআর
মন্তব্য করুন: