[email protected] সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
২৮ আশ্বিন ১৪৩২

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল চুক্তিতে অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ৮:৫৫ পিএম

সংগৃহীত ছবি

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের চুক্তিতে অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারের শত কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক ছয় মন্ত্রী ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১২ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস) নামের প্রতিষ্ঠানকে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত বৈধ টেন্ডার বাতিল করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ওই চুক্তি সম্পাদিত হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, সিএনএস লিমিটেডকে নির্দিষ্ট টাকার অঙ্কে নয়, বরং মোট আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জে (ভ্যাট ও আইটি ব্যতীত) কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৪৮৯ কোটি টাকার বেশি বিল গ্রহণ করে। অথচ ২০১০ থেকে ২০১৫ মেয়াদে একই সেতুতে যৌথভাবে এমবিইএল-এটিটি কোম্পানি টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে ব্যয় করেছিল মাত্র ১৫ কোটি টাকার কিছু বেশি।

তুলনামূলকভাবে, ২০২২-২৫ মেয়াদে একই প্রযুক্তিতে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়, যা পাঁচ বছরে রূপান্তর করলে আনুমানিক ১১২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ফলে সিএনএস লিমিটেডকে একক উৎসভিত্তিকভাবে দায়িত্ব দেওয়ার কারণে সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন —
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, উপ-সচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম, এবং সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল।

দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের বা অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও আত্মসাৎমূলক কার্যক্রমে লিপ্ত ছিলেন।

এই ঘটনায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর