[email protected] শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
১৯ আশ্বিন ১৪৩২

শিল্পী-সাহিত্যিকদের মৃত্যু পর নয়, জীবদ্দশায়ই সম্মান জানাতে চাই’ — ফারুকী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২৫ ৬:৫৮ পিএম

সংগৃহীত ছবি

শিল্পী-সাহিত্যিকদের মৃত্যুর পর তাদের নিয়ে অনুষ্ঠান করা হলেও জীবদ্দশায় তেমন উদ্যোগ দেখা যায় না— এই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৫১ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এই বিষয়ে ‘কৈফিয়ত’ দিয়েছেন।

ফারুকী লিখেছেন,

“আমার এক বন্ধু প্রশ্ন তুলেছেন— শিল্পী-সাহিত্যিকদের মৃত্যুর পর কেন উদযাপন করা হয়? জীবিত অবস্থায় কেন কিছু করা হয় না? আহমদ রফিকের মৃত্যু প্রসঙ্গে তার এই প্রশ্ন যথেষ্ট যৌক্তিক। আসলে আমরাও সবসময় এই প্রশ্নই করেছি।”

তিনি বলেন,

“আহমদ রফিকের জীবিত অবস্থাতেই আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। আমাদের বড় পরিকল্পনা হচ্ছে— বাংলাদেশি কিংবদন্তিদের জীবন ও কাজকে উদযাপন করা। এটি প্রথমে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাবে। এ নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার তৈরি করছে। এই অনুষ্ঠানগুলো যেন নিছক আনুষ্ঠানিকতা না হয়ে পড়ে, সেজন্য প্রোগ্রাম কিউরেশনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

ফারুকী আরও জানান,

“আমরা বসে নেই। ইতোমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন আপাকে নিয়ে একটি আয়োজন করেছি, যেখানে শিল্পী খুরশিদ আলম ভাই বলেছেন— এমন আয়োজন তিনি আগে দেখেননি। আগামী ৮ অক্টোবর উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্মদিন উপলক্ষে লালবাগ কেল্লায় ‘ধ্রুপদী সন্ধ্যা’ আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে দেশি-বিদেশি শিল্পীরা অংশ নেবেন।”

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন,

“যারা আমাদের মাঝে আছেন এবং যারা চলে গেছেন— সবাইকে আমরা উদযাপন করব। বদরুদ্দীন উমর, সেলিম আল দীন, জেমস, তারেক মাসুদ, এস এম সুলতান, নাসির আলী মামুনসহ আরও অনেকেই এই তালিকায় আছেন। আহমদ রফিক ভাইও ছিলেন আমাদের পরিকল্পনায়, কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে দেখা করতে গিয়ে বুঝেছিলাম তাঁর শারীরিক অবস্থা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার মতো নয়।”

ফারুকী তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন,

“অনেকে জানতে চেয়েছেন, সরকার কেন আহমদ রফিকের জন্য কিছু করেনি। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই— সরকার তার দায়িত্ব সর্বোচ্চভাবে পালন করেছে। তবে আমরা শিল্পী-সাহিত্যিকদের সাহায্য করে প্রচারণা চালানোকে অসম্মানজনক মনে করি। তাই যাদের পাশে দাঁড়িয়েছি, তা প্রচার করিনি। আজ বলছি শুধু ভুল বোঝাবুঝি দূর করার জন্য।”

তিনি বলেন,

“আমরা অল্পদিনের সরকার— সবকিছু একসঙ্গে বদলানো সম্ভব নয়। তবে সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্তি, নতুন আখ্যান গঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। শিল্পকলা একাডেমি গান ও নাচের স্কুল, নতুন বিভাগ, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীত উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। বিয়েনালকেও পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে।”

শেষে ফারুকী যোগ করেন,

“এটা খুবই কঠিন দায়িত্ব— এক ধরনের ‘thankless job’। পাশাপাশি নিজের চলচ্চিত্র নির্মাণ না করতে পারার কষ্টও আছে। তবে চেষ্টা করছি, যেন এই দায়িত্বের মধ্যেও শিল্প-সংস্কৃতির জগতে স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায়।”

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর