[email protected] সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৩ আশ্বিন ১৪৩২

খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সহিংসতা নিয়ে সেনাবাহিনীর বক্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১:২৭ এএম

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চালক মামুনের হত্যাকে কেন্দ্র করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) মূল ও অঙ্গ সংগঠনগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামের দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এই সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও বেশ কিছু মানুষ আহত হয়।

২০২৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকায় এক স্কুলছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগে ইউপিডিএফের দাবি করা সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে নেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের পরও ইউপিডিএফের অঙ্গ সংগঠন পিসিপি বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ডাক দেয় এবং ২৫ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হয়। অনলাইনেও কিছু ব্লগার ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি বাঙালিদের উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

আইএসপিআর জানায়, ২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফের কর্মী উখ্যানু মারমার নেতৃত্বে এবং অনলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণার প্রভাবে খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উশৃঙ্খল অংশীরা টহলরত সেনাদলের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, যাতে তিনজন সেনা আহত হন। সেনাবাহিনী ধৈর্য্য ও সংযম প্রদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।

পরবর্তীতে, ২৭ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো বিভিন্ন স্থানে গুলি, ভাঙচুর, অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ এবং রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে। জেলা প্রশাসন খাগড়াছড়ি ও গুইমারা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারারাত কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একটি সম্ভাব্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।

রোববার সকাল থেকে ইউপিডিএফের কর্মীরা গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাস্তা অবরোধ এবং সাধারণ জনগণকে উসকানি দেয়। তারা দেশীয় অস্ত্র, ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা ও গুলি দিয়ে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন অফিসারসহ ১০ জন সেনা আহত হন। একই সময়ে বিজিবির যানবাহন ভাঙচুর ও সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালীন ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা পাহাড় থেকে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে।

আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সশস্ত্ররা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। রামসু বাজার ও গুইমারা এলাকায় অতিরিক্ত সেনাদল মোতায়েনের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিবৃতিতে সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা সবসময় ধৈর্য, সংযম ও মানবিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে এবং অপ্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর