সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করছেন, সংস্কার কার্যক্রমে গতি না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে।
তার ভাষায়, “সংস্কার কমিটির প্রস্তাবগুলো মাঝপথে থেমে যাচ্ছে। এটা কি আকাঙ্ক্ষার অভাব, সক্ষমতার অভাব, নাকি বড় কোনো স্বার্থসংঘাত লুকিয়ে আছে? অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে—এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে উঠছে।”
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নে নাগরিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, “বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এই মুহূর্তে এক ধরনের ঝড় বয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব অর্থনীতি, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও সামাজিক জীবনের প্রতিটি স্তরে পড়ছে। এ সময়ে আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পাওয়া বৈষম্যবিরোধী চেতনা। সেই চেতনাকে ধরে রাখা এবং বাস্তবায়ন করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের নানা উদ্যোগে প্রথমদিকে যে উৎসাহ ছিল, সময়ের সঙ্গে তা স্তিমিত হয়ে গেছে। অনেক কমিটি ও কমিশন গঠিত হলেও তাতে পিছিয়ে পড়া মানুষের সংযুক্তি যথাযথভাবে হয়নি। শেষ সময়ে এসে দেখা গেছে, সংস্কার প্রক্রিয়া মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
ড. দেবপ্রিয়ের মতে, “সরকার আসে, সরকার যায়। কিন্তু জনগণ থাকবে, দেশ থাকবে। তাই আমাদের চাহিদা নাগরিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিত হয়ে এগিয়ে যাওয়া।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে এক বছরে সংস্কার কার্যক্রম কতদূর এগিয়েছে এবং অবশিষ্ট সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার কতটা এগিয়ে নিতে পারবে। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের প্রতিফলন কতটা থাকছে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ উদ্যোগের মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের অংশগ্রহণ ও কণ্ঠস্বর কতটা প্রতিফলিত হচ্ছে, তা নজরদারির আওতায় আনা হবে।
সেমিনারে উপস্থিত বিভিন্ন নাগরিক প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে নিজেদের মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: