প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা ডিসি মাসুদের কুশপুত্তলিকা দাহ ও মৎস্য ভবন মোড়ে বিক্ষোভ

রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে সড়ক অবরোধ করে এক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন, প্রেসক্লাব ও হাইকোর্ট হয়ে মৎস্য ভবনের সামনে পৌঁছান। তারা মূলত ডিএমপি সদর দপ্তরের দিকে যাচ্ছিলেন, তবে পুলিশ তাদের মৎস্য ভবন মোড়ে বাধা দেয়। শিক্ষার্থীরা সড়কে বসে পড়লে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে কদম ফোয়ারা থেকে শাহবাগগামী আংশিক সড়ক দিয়ে ধীরগতিতে যান চলাচল চলতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের সুবিধা দেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তারা মৎস্য ভবন মোড় ছাড়েন।

এরপর শিক্ষার্থীরা রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর সামনে অবস্থান নেন, যার ফলে শাহবাগমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন আল মোহাম্মদ তাসরিফ বলেন, “আমাদের দুটি প্রধান দাবি আছে। প্রথমত, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ক্ষমা চাইতে হবে, ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে এবং তাঁকেও ক্ষমা চাইতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে ও দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।”

গতকাল বুধবার শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে যমুনা অভিমুখে যাত্রা করার সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান এবং লাঠিপেটার মুখোমুখি হন। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর তারা পাঁচ দফা দাবিও ঘোষণা করেন।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি:
১. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।
২. প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত কমিটি বাতিল করে, শিক্ষক প্রতিনিধি ও প্রকৌশল আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পুনর্গঠন করে তিন দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার বহন করবে এবং আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
৪. রোকন ভাইয়ের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলার জন্য ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে।

আগের তিন দফা দাবি:
১. ইঞ্জিনিয়ারিং ও নবম গ্রেড/সহকারী প্রকৌশলী পদে প্রবেশের জন্য পরীক্ষা ও বিএসসি ডিগ্রি বাধ্যতামূলক, কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি অনুমোদন হবে না।
২. দশম গ্রেড/উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
৩. বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া প্রকৌশলী পরিচয় ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।