বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি প্রকল্পে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাতের ঘটনায় ফেঁসে গেছেন দুই কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) মো. আখতার মামুন আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন। পরে সেই অর্থ থেকে ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করে প্রকল্পের মনিটরিং কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন মোল্লার অফিস কক্ষে টেবিলের ড্রয়ারে সংরক্ষণ করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রকল্প পরিচালককে ওএসডি করা হয় এবং মনিটরিং কর্মকর্তাকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পরে কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা ওই ড্রয়ার থেকে ১৮ লাখ টাকা নগদ উদ্ধার করেন। তবে পুরো অর্থের হিসাব মিলছে না। জানা গেছে, বাকি টাকা প্রকল্প পরিচালক ও মনিটরিং কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন,
“একসঙ্গে ২৩ লাখ টাকা উত্তোলন, তা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা রাখা এবং পরে নগদ আকারে অফিস কক্ষে সংরক্ষণ করা গুরুতর আর্থিক অপরাধ। প্রকল্প পরিচালক সিলিং ভঙ্গ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলেছেন, যা স্পষ্ট অনিয়ম।”
তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে—সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে ১০ লাখ টাকার কোনো ব্যয়ের প্রমাণ নেই। প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দকৃত ১৯ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ১ লাখ টাকার ব্যয় দেখানো হলেও কোনো ভাউচার পাওয়া যায়নি।
মনিটরিং কর্মকর্তা ইমরান হোসেন মোল্লা স্বীকার করে বলেন,
“প্রকল্প পরিচালক আমার কাছে ২০ লাখ টাকা জমা রাখেন। এর মধ্যে ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাকি ১৮ লাখ টাকা আমি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি।”
তবে কেন এত বিপুল অঙ্কের টাকা তার কাছে নগদ রাখা হয়েছিল—সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিচালক আখতার মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। তবে মনিটরিং কর্মকর্তা ইমরানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিযোগ,
“১৮ লাখ টাকা তার ড্রয়ার থেকেই উদ্ধার হয়েছে। অথচ তাকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে তিনি পুরো ঘটনার মূল নায়ক।”
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: