[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫
১৩ ভাদ্র ১৪৩২

"বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো অর্থ নেই" — ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ আগষ্ট ২০২৫ ১:১৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যদি নির্বাচন বৈধ ও আইনসঙ্গত না হয়, তবে তার কোনো বাস্তবিক মূল্য থাকে না।

 তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করাই তাঁর প্রধান দায়িত্ব।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়া (CNA)-কে গত বুধবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

ড. ইউনূস বলেন, "আমরা আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। তবে রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে এখনো বহু সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে, কারণ এটি দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি, অপব্যবহার এবং স্বেচ্ছাচারের শিকার হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, সরকারে থাকার কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তাঁর নেই। নির্বাচন শেষে তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন।

ড. ইউনূস বলেন, “নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তবে তা অর্থহীন হয়ে পড়ে। আমার দায়িত্ব একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা। গণ-অভ্যুত্থানের সময় জনগণের যেসব আকাঙ্ক্ষা উঠে এসেছে, তা পূরণের জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্য তিনটি প্রধান স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে— সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে আগের সংকটগুলো আবার ফিরে আসবে।

সাক্ষাৎকারে উঠে আসে, ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যান এবং তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাঁর প্রত্যর্পণ চাইলেও দিল্লির পক্ষ থেকে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।

এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, "আমরা ভারতকে অনুরোধ করেছি, আপনারা তাকে (হাসিনাকে) রাখুন, আমাদের বিচার চলবে। তবে নিশ্চিত করতে হবে, তিনি যেন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পান।"

আঞ্চলিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, তেমনি ভারতের সঙ্গেও আমরা ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। কখনোই বলিনি, ভারতকে আমরা দূরে রাখতে চাই। বরং নেপাল, ভুটান এবং ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’—এই সাতটি রাজ্যকে নিয়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা সম্ভব। বঙ্গোপসাগর আমাদের সবার জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।”

তিনি আরও জানান, শুরুতে দায়িত্ব গ্রহণে অনিচ্ছুক থাকলেও ছাত্রনেতাদের অনুরোধ এবং জনগণের ত্যাগ তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।

শেষে ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, “বাংলাদেশ যেন আর পথভ্রষ্ট না হয়। যুবসমাজ তাদের ভোটের মাধ্যমে নিজেদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশাকে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নেবে। আমি চাই, একটি ভালো সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক, যা গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে দেশ পরিচালনা করব

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর