পাকিস্তানের দুই শীর্ষ মন্ত্রী এ মাসের শেষ দিকে পৃথক সফরে ঢাকায় আসছেন।
এর মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ২১ আগস্ট চার দিনের সফরে আসবেন, আর দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৩ আগস্ট দুই দিনের সফরে পৌঁছাবেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইসহাক দারের সফরের সময়সূচি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তবে বুধবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানও ২১ থেকে ২৪ আগস্ট ঢাকা সফর করবেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন করে উষ্ণ হতে শুরু করেছে। গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচের ঢাকায় আগমন সেই প্রক্রিয়াকে গতি দেয়। এবার ইসহাক দারের সফরে রাজনৈতিক স্তরের ঘনিষ্ঠতা ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, দুই মন্ত্রীর সফরের পর পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেবও ঢাকায় আসতে পারেন। তিনি সেপ্টেম্বরে বা অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ–পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠকে যোগ দেবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে। উল্লেখ্য, সর্বশেষ জেইসি বৈঠক হয়েছিল ২০০৫ সালে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ইসহাক দারের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে ২৪ আগস্ট, যা দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে এবং একাধিক সমঝোতা স্মারক (MoU) সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের চুক্তি।
গত মাসে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভির সফরের পর কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তিতে অগ্রগতি হয়েছে। রাজনৈতিক অনুমোদন মিললে ইসহাক দারের সফরের সময়ই এ চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, জাম কামাল খানের সফরে মূল গুরুত্ব পাবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এ সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে, যার নেতৃত্ব দেবেন দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবেরা।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমরা কোনো অস্বাভাবিক পথে যাচ্ছি না। অন্য অনেক দেশের মতো স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছি। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানুষের চলাচল সহজ করার ওপর জোর দিচ্ছি। পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের প্রয়োজন নেই। অতীতে অকারণে যে বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা থেকে আমরা সরে এসেছি। তবে অমীমাংসিত তিনটি বিষয় আলোচনায় থাকবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: