প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের মিশনপ্রধান আন্দ্রে কার্সটেন্স।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অগ্রগতি, গণতন্ত্রের উত্তরণ এবং আসন্ন নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে আন্দ্রে কার্সটেন্স অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,
“পূর্ববর্তী সরকার অপসারিত হওয়ার পর বাংলাদেশ যে এক অন্তর্বর্তী সময় অতিক্রম করছে, তা আপনি দক্ষতা ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সামাল দিয়েছেন। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে।”
তিনি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারে ইউনূসের অবদানের কথাও তুলে ধরেন। সম্প্রতি ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“এই ঘোষণাপত্রটি ইতিহাস ও গণআকাঙ্ক্ষার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ঘোষণাকে ‘সময়োপযোগী’ এবং ‘উপযুক্ত’ সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়ে কার্সটেন্স বলেন, এর মাধ্যমে দেশ গণতন্ত্রের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
আলোচনায় চলমান রোহিঙ্গা সংকট এবং আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়েও মতবিনিময় হয়। উক্ত সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক ও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা।
সাক্ষাৎকালে বিদায়ী এই কূটনীতিক ড. ইউনূসকে একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপহার দেন। নিজের লেখা ও গাওয়া একটি গান উপহার দেন তিনি, যা বাংলাদেশের ‘জেনারেশন জেড’-এর নেতৃত্বে সংঘটিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রশংসায় লেখা হয়েছে। গানটির সুর নেওয়া হয়েছে জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত গান “Bangladesh” থেকে।
এই গানটি রেকর্ড করা একটি ভিডিও আকারে উপস্থাপন করা হয় ড. ইউনূসের কাছে।
গানের কথাগুলো ছিল এরকম:
“বাংলাদেশ, বাংলাদেশ
বন্ধুসুলভ মানুষদের দেশ, তারা ভালো করছে
বিপ্লবের মাধ্যমে খুলেছে পথ
তাদের অধিকারের কথা বলার জন্য
এটা কেবল কল্পনা নয়, একটি পবিত্র গাঁথা
বাংলাদেশের মানুষের জন্য চূড়ান্ত আকাঙ্ক্ষা।”
“বাংলাদেশ, বাংলাদেশ
বঙ্গোপসাগরের তীরে এক নব-জীবনের উত্থান
বিপ্লবের মাধ্যমে খুলেছে পথ
বহু বছর বিভ্রান্তির পর
জেন-জি দেখিয়েছে পথ
দুঃস্বপ্নকে দিনে পরিণত করেছে।”
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: