[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

"রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী"

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২৫ ৯:১৫ পিএম

সংগৃহীত ছবি

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই রাতের বেলায় ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ব্যালট ঢোকানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া ওই পরামর্শের পর সরকারের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি মামলায় ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া এক জবানবন্দিতে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। গত ২৪ মার্চ আদালতে দেওয়া পাঁচ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে তিনি নির্বাচন, গুম, নির্যাতন এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন সংক্রান্ত নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

 

জবানবন্দিতে মামুন দাবি করেন, গুম, অপহরণ ও ক্রসফায়ারের মতো গুরুতর নির্দেশনা দেওয়া হতো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। এসব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি। এমনকি পুলিশের মহাপরিদর্শক হয়েও তাকে অনেক বিষয় সম্পর্কে অবহিত করা হতো না।

তিনি আরও বলেন, “বিশেষ কিছু অভিযান সরাসরি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দিয়ে বাস্তবায়ন করানো হতো। সামরিক উপদেষ্টার নির্দেশেই এসব কার্যক্রম চলত, অনেক সময় পুলিশ সদর দপ্তর বা আইজিপিকে না জানিয়েই।”

জবানবন্দিতে আরও উঠে আসে, বিরোধী দল দমনে ‘টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স (টিএফআই) সেল’-এর ব্যবহার এবং রাজনৈতিক নেতাদের আটকের ঘটনা। সেখানে ব্যারিস্টার আরমান নামের একজনকে বন্দি করে রাখার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তিনি।

মামুন বলেন, তৎকালীন ডিবির (ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ‘জিন’ নামে ডাকতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কারণ রাজনৈতিক নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে তাকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মনে করা হতো।

 

সাবেক এই আইজিপি আরও দাবি করেন, সরকারবিরোধী ‘জুলাই আন্দোলন’ দমন করতে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো এবং মারণাস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিকভাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন নিয়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়, যার তথ্য সরাসরি পুলিশ প্রধানকে জানানো হয় প্রতিদিনের গোপন বৈঠকে।

 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া একটি মামলার তদন্ত চলাকালে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর