উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিমানে সংঘটিত ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে শুরু থেকেই তৈরি হয়েছিল বিভ্রান্তি।
প্রাথমিক তথ্যের অসামঞ্জস্য এবং দেহাবশেষ শনাক্তকরণে সময় লাগায় এ বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর হালনাগাদ ব্যাখ্যায় এখন স্পষ্ট হয়েছে—এই দুর্ঘটনায় মোট ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
প্রথম দিকে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) ২৪ জুলাই যে তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে নিহতের সংখ্যা ছিল ১৫। কিন্তু ২৭ জুলাই হালনাগাদ তালিকায় তা ১৪ জনে নামিয়ে আনা হয়।
কারণ, ফরেনসিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে—একটি বডিব্যাগে পাওয়া পাঁচটি দেহাংশ আসলে দুইজন শিক্ষার্থী, লামিয়া আক্তার সোনিয়া ও আফসানা আক্তার প্রিয়ার দেহের অংশবিশেষ।
ফলে আলাদাভাবে গণ্য হওয়া ওই পাঁচটি দেহাংশ দুইটি মরদেহ হিসেবে চূড়ান্তভাবে বিবেচিত হয়।
সিএমএইচ সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার দিন ২১ জুলাই মর্চুয়ারিতে মোট ১৫টি বডিব্যাগ রাখা হয়। তুরাগ থানা পুলিশের সুরতহাল অনুযায়ী, এগুলোর মধ্যে ১১টি ছিল পূর্ণাঙ্গ মরদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ, আর ৫টি বিচ্ছিন্ন দেহাংশ।
২১ ও ২২ জুলাইয়ের মধ্যে স্বজনদের শনাক্তে ৯টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। বাকি অংশগুলোর ফরেনসিক বিশ্লেষণে সময় লাগে।
২২ জুলাই, সিআইডির ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল এবং সিএমএইচ থেকে মোট ১৪টি নমুনা সংগ্রহ করে এবং নিহতদের পরিবারের কাছ থেকে নেয় ১১টি রেফারেন্স নমুনা।
বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া যায়—৫টি বিচ্ছিন্ন অংশ দুইজনের দেহাবশেষ। ফলে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪, যা সিএমএইচে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে আগেই হস্তান্তর হওয়া ২০টি মরদেহ মিলিয়ে মোট নিহত ৩৪ জনের সংখ্যা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় মোট ১১২ জন ভুক্তভোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৮ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং ৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর হিসাব
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভাষ্যমতে, প্রথম দিকে অশনাক্ত দেহাবশেষগুলো পৃথক মরদেহ হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ায় সেই সংখ্যা হ্রাস পায়।
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা, দেহাবশেষের খণ্ডিত অবস্থা এবং স্বজনদের মানসিক অবস্থার কারণে নিহতের সংখ্যা নিরূপণে সময় লেগেছে।
তবে সর্বশেষ ফরেনসিক ও ডিএনএ বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে—এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪ জন।
এসআর
মন্তব্য করুন: