রাষ্ট্রের গোপনীয় দলিল প্রকাশের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব (উপ-কমিশনার) মুকিতুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।
একই সঙ্গে বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে আরও ১৩ কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে এ বিষয়ে একাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনগুলোতে সই করেন আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, মুকিতুল হাসান রাষ্ট্রের ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ একটি দলিল প্রকাশ করে সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
এ বিষয়ে সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, “সরকারি কোনো কর্মকর্তা অনুমোদন ছাড়া গোপন নথি প্রকাশ করতে পারেন না। তার যদি কোনো আপত্তি থাকে, তাহলে সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর নিয়ম রয়েছে। সাধারণ নাগরিক আর সরকারি কর্মকর্তা—এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।”
এদিকে একই দিনে প্রকাশ্যে বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে আরও ১৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয় মঙ্গলবার (১৫ জুলাই)। তারা হলেন:
পরদিন আরও ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। তারা হলেন:
সব প্রজ্ঞাপনেই বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন এই কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে, এনবিআরের কর বিভাগের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মূসকনীতির সদস্য ড. মো. আবদুর রউফ, শুল্কনীতির সদস্য হোসেন আহমদ এবং বরিশাল কর কমিশনার মো. শব্বির আহমদকে ২ জুলাই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। আর গত ১ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ওএসডি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধিকাংশ কর্মকর্তা এনবিআর সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: