জুলাই গণহত্যা মামলায় নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করায় শর্তসাপেক্ষে সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ক্ষমা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তাই ট্রাইব্যুনাল বলেছে, এ ক্ষমা কার্যকর হবে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে—অর্থাৎ, মামুনকে সম্পূর্ণ ও সত্য তথ্য আদালতে উপস্থাপন করতে হবে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দিলেও এর লিখিত অনুলিপি শনিবার (১২ জুলাই) প্রকাশ করা হয়। আদেশে বলা হয়, নিজের এবং তার সঙ্গীদের সম্পৃক্ততা সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রকাশে মামুন সম্মতি দিয়েছেন এবং আদালতকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর একাধিক ধারায় মামুন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, অন্য দুই অভিযুক্ত পলাতক।
আদালতে মামুন বলেন, “জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। আমি নিজেকে দোষী মানছি এবং রাজসাক্ষী হয়ে পুরো ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরতে চাই।”
তার আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ ট্রাইব্যুনালে তার পক্ষে দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। প্রধান প্রসিকিউটরও শর্তসাপেক্ষে মামুনকে ক্ষমা করার প্রস্তাবে সম্মতি দেন।
আদেশে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে, “যেহেতু মামুন অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন এবং অপরাধের পেছনের পুরো প্রক্রিয়া ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়ে সত্য প্রকাশে রাজি হয়েছেন, তাই তাকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা প্রদান করা হলো।”
একইসঙ্গে আদেশে বলা হয়, “স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে না রেখে আলাদাভাবে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলো।”
মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ বলেন, “রাজসাক্ষী হিসেবে তিনি যদি যথাযথভাবে আদালতে সহযোগিতা করেন এবং ঘটনার সব দিক ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন, তবেই এই ক্ষমা কার্যকর হবে।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক আইজিপি মামুনকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ১০ জুলাই তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, “আমি আদালতের কাছে সব সত্য উন্মোচন করতে চাই এবং তদন্তে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
এসআর
মন্তব্য করুন: