[email protected] শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২

নির্বাচনে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৫ ৮:২৭ এএম

সংগৃহীত ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে অবহেলা, অনিয়ম বা অপরাধে যুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়াতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কমিশনের অষ্টম সভায় এ সংক্রান্ত খসড়া উপস্থাপন করা হবে।

নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ সংশোধনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এই খসড়া তৈরি করেছে ইসি সচিবালয়।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। আলোচ্য এজেন্ডায় রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মূল আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (RPO)’ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন সংশোধনের বিষয়টিও।

পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনি দায়িত্ব পালনে অনিয়ম বা অসদাচরণ করলে বর্তমানে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। সংশোধিত খসড়ায় এ শাস্তি বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে।

শাস্তিযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে—দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি, অবহেলা, অনৈতিক আচরণ কিংবা নির্বাচনি কাজে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার। এসব ক্ষেত্রে শুধু ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাই নয়, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এ আইনের আওতায় আসবেন।

সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইসি যে সাজা প্রদান করবে, তা সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী সংস্থাকে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এ বিষয়ে ইসিকে অবহিত করতে হবে। এর মাধ্যমে আগে যেসব ক্ষেত্রে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো না, সে রকম পরিস্থিতি এড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

চাকরি থেকে বরখাস্ত ও পদাবনতি বহাল

সংশোধনীতে কারাদণ্ড ও জরিমানার পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতি ও বেতন স্থগিতের মতো প্রশাসনিক শাস্তি বহাল রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এসব প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত বলেও সূত্রে জানা গেছে। তবে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিষয়টি আজকের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তোলা হবে।

এছাড়া, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনের সংশোধনীতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক সার্ভিস কমিশন গঠনের এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা কার্যক্রমকে আইনের আওতায় আনার প্রস্তাবও আলোচনায় আসছে।

এই উদ্যোগকে নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অতীতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নানা অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল, তার নিরসনে এটি হতে পারে কার্যকর এক পাল্টা ব্যবস্থা।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর