[email protected] শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’: ইতিহাসের স্মারক ও জনগণের প্রত্যয়ের প্রতিচ্ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২৫ ৩:০৯ পিএম

প্রায় সম্পন্নের পথে রয়েছে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’-এর নির্মাণকাজ।

এখন চলছে জাদুঘরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্মারক সংগ্রহের কাজ। আগামী ৫ আগস্ট জাদুঘরটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে। এ উপলক্ষে সব প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে জোরেশোরে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গণ-অভ্যুত্থানভিত্তিক এই জাদুঘরে থাকবে জুলাই আন্দোলনের স্থিরচিত্র, শহীদদের ব্যবহৃত পোশাক, চিঠিপত্র, দলিল, পত্রিকার কাটিং, ভিডিও, অডিও ও অন্যান্য নানা ঐতিহাসিক উপকরণ। এসব উপস্থাপন করবে সে সময়কার আন্দোলনের বিস্তৃতি ও গুরুত্ব।

বিশেষভাবে স্থান পাচ্ছে সে সময়কার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ওই সময়ের রাজনৈতিক পালাবদলের চিত্রও। তবে এসব উপস্থাপন সম্পূর্ণ ইতিহাসনির্ভর ও প্রামাণ্য দলিলের ভিত্তিতে সাজানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, “এই জাদুঘরটি সরাসরি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ হচ্ছে, ফলে এ বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমার নেই।” তবে তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ আগস্টই জাদুঘরটি উদ্বোধন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, জাদুঘরের সংগ্রহশালাকে সমৃদ্ধ করতে একটি আর্কাইভ ও কালেকশন টিম দেশজুড়ে স্মারক সংগ্রহের কাজ করছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকেও স্মৃতিস্মারক জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

জাদুঘরের অবস্থানও ব্যতিক্রমধর্মী। রাজধানীর মিরপুর রোড সংলগ্ন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন—গণভবনকে রূপান্তর করা হয়েছে এই স্মৃতি জাদুঘরে। জানা যায়, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ বাতিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বাসভবন রাষ্ট্রের দখলে নেয়া হয় এবং ৫ সেপ্টেম্বর সরকারিভাবে সেখানে স্মৃতি জাদুঘর গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

নির্মাণ-পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জাদুঘরটির ভেতরে ও বাইরে স্থাপত্য-সংস্কার কাজ প্রায় শেষ।

ভবনের কিছু অংশ পূর্বাবস্থায় রেখে দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের সময়কার ক্ষতচিহ্নগুলো। প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি অংশ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তারা আরও জানান, গত জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলনের পর গণভবন সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। সেই সময়কার স্মৃতিগুলো এখন ইতিহাসের অংশ, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই এই জাদুঘরের মূল লক্ষ্য।

স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং ইতিহাসের সংরক্ষণের এই প্রয়াস যেন হয়ে ওঠে একটি জাতির আত্মপরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথি—এমনটিই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর