[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

আগামী এক বছরে মালয়েশিয়া নেবে ৩০-৪০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী: আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৫ ৫:২২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

আগামী এক বছরে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ হাজার কর্মী নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘জাপানের শ্রমবাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এ তথ্য জানান।

আসিফ নজরুল বলেন,

“মালয়েশিয়া নিয়ে কিছু গুজব রয়েছে—অনেকে বলছেন তারা ১০-১২ লাখ কর্মী নেবে। আমি নিজে সরেজমিন ঘুরে এসেছি। বাস্তবে দেখা গেছে, আগামী এক বছরে বাংলাদেশ থেকে তারা খুব বেশি হলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার কর্মী নেবে।”

তিনি আরও বলেন, আগের সরকারের সময় মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছিল যেখানে রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়া দেবে এবং বাংলাদেশ সেগুলো অনুমোদন করবে। এই ব্যবস্থাকে সাধারণত ‘সিন্ডিকেট’ বলা হয়। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সিন্ডিকেটবিরোধী অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন,

“সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হলে চুক্তি পরিবর্তন করতে হবে, যা একতরফাভাবে করা সম্ভব নয়। মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের আলোচনায় যেতে হবে। যদি তারা চুক্তি পরিবর্তনে রাজি না হয়, তাহলে দুটি পথ খোলা—তাদের দেওয়া কিছু নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মী পাঠানো, অথবা কর্মী না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,

“যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোক পাঠাই, তাহলে সমালোচনা হবে। আবার পাঠানো বন্ধ করলে অন্তত ৪০ হাজার কর্মীর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা মালয়েশিয়াও মনে রাখবে। আমাদের জন্য এটি এক কঠিন বাস্তবতা।”

জাপানের শ্রমবাজার প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, জাপানে প্রচুর কর্মীর চাহিদা রয়েছে, তবে বাংলাদেশের সমস্যা হলো দক্ষতার ঘাটতি।

তিনি বলেন,

“আমাদের অনেকেই ভাষা শিখলেও বাস্তবে দক্ষ নন। তাই আমরা জাপান সেল গঠন করেছি। একটি ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট চালু হবে। পাশাপাশি, প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জাপানি উদ্যোক্তাদের বলা হয়েছে, আপনারা চাইলে টিটিসি (টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার) পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন।”

তিনি জানান, ইতোমধ্যে মনোহরদী টিটিসি জাপানি অংশীদারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা তাদের প্রয়োজনমাফিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতে পারেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন,

“বিদেশগামী কর্মীদের ভিসা জটিলতার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে জাল সনদপত্র ও ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট। অনেকে মনে করেন, অদক্ষ হলেও বিদেশে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে জাপানসহ অনেক দেশে ভিসা জটিলতা তৈরি হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন,

“জাপানের ভিসার জন্য এখন অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো ভুয়া সার্টিফিকেট ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এখন সময় এসেছে এ ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার।”

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর