ভুয়া তথ্য, গুজব ও মিথ্যা সংবাদ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউনেসকোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি সুসান ভাইজ ও ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন অ্যান্ড জার্নালিস্ট সেফটি বিভাগের সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার মেহদি বেনশেলাহ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকারটি হয় ইউনেসকো ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে প্রণীত “বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন: মুক্ত, স্বাধীন ও বহুমাত্রিক গণমাধ্যমের ওপর গুরুত্ব” শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রকাশের আগ মুহূর্তে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন,
“আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ভুয়া তথ্য ও গুজব। কিছু তথ্য দেশের বাইরের উৎস থেকে ছড়ালেও, অনেকে দেশের ভেতর থেকেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটি একধরনের অবিরাম ‘বোমাবর্ষণ’ যা সমাজ ও রাষ্ট্রে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, শুধু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মই নয়, প্রচলিত প্রচারমাধ্যম থেকেও অনেক সময় বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ যেন সরাসরি গণমাধ্যমের সঙ্গেও কাজ করে, সেই আহ্বান জানান তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন,
“যদি কোনো গণমাধ্যম বারবার মিথ্যা তথ্য প্রচার করে, তাহলে তাদের মনে করিয়ে দিতে হবে যে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। জাতিসংঘের বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—এই প্রসঙ্গে আপনাদের সহায়তা খুব দরকার।”
জবাবে ইউনেসকোর বাংলাদেশ প্রধান সুসান ভাইজ জানান, আগামীকাল (৩ জুলাই) প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্বশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন,
“এই প্রতিবেদন দেখাবে, কোথায় কী কার্যকর হচ্ছে এবং কোথায় ঘাটতি রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ থাকবে, যা কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগের জন্য দিকনির্দেশক হবে।”
সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার মেহদি বেনশেলাহ জানান, প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং বিশেষভাবে নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সুপারিশ থাকবে।
তিনি বলেন,
“এই বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ইউএনডিপির ‘স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস, পলিসিস অ্যান্ড সার্ভিসেস (এসআইপিএস)’ প্রকল্পের আওতায় এবং ইউনেসকোর গণমাধ্যম উন্নয়ন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংরক্ষণের ম্যান্ডেট অনুযায়ী এই প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: