জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের স্কাউট সদস্যদের আত্মাহুতিকে বিশ্ব স্কাউট ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, "এই আত্মাহুতি শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের স্কাউট আন্দোলনের জন্য গৌরবের বিষয়। নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে স্কাউটদের এই অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।"
সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘বাংলাদেশ স্কাউটস কাব কার্নিভাল’ ও ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, "জীবনের শুরুতে স্কাউটিং আমার আদর্শিক চর্চার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাকালীন আমি স্কাউটিং শুরু করি এবং সেই যাত্রা আমাকে কানাডার গ্লোবাল স্কাউট জাম্বুরি থেকে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে গেছে। স্কাউটিংয়ের সুবাদে বিশ্বের বহু দেশ দেখা, বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার অভিজ্ঞতা পেয়েছি, যা আমার চিন্তার জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে।"
তিনি স্কাউটিংয়ের সৃজনশীল ও ব্যবহারিক দিকের প্রশংসা করে বলেন, "স্কাউটিংয়ের মধ্যে নতুন কিছু করার এবং প্রতিযোগিতার যে সুযোগ থাকে, তা একজন কিশোরের মনে আত্মবিশ্বাস ও উদ্দীপনা জাগায়। এ কর্মসূচিতে বিশ্বভ্রমণ, ভাষা শেখা ও আন্তঃসাংস্কৃতিক বন্ধন গড়ার সুযোগ আরও প্রসারিত করা উচিত। এর মাধ্যমে এক কিশোর নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারে।"
স্কাউট সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “স্কাউটিং তোমার জীবনে একটি বড় দরজা খুলে দিয়েছে। এখন তোমার দায়িত্ব হলো সেই দরজা অন্যের জন্যও খুলে দেওয়া। তুমি যেহেতু অনেক দূর এগিয়ে গেছো, তোমাকেই এখন নেতৃত্ব নিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ শহীদ হওয়া আটজন স্কাউট সদস্যের পরিবারের হাতে ‘গ্যালানট্রি অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন। পাশাপাশি স্কাউটিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন।
এ উপলক্ষে আজ সারাদেশে একযোগে ৫২৭টি স্থানে কাব কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসের এডহক কমিটির আহ্বায়ক মো. এহছানুল হক এবং সদস্য সচিব মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তারা স্কাউট আন্দোলনের গুরুত্ব এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: