চার দিনের সরকারি সফর শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
গত ৯ জুন (সোমবার) সন্ধ্যায় তিনি যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং পরদিন (মঙ্গলবার) সকালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান।
প্রধান উপদেষ্টার সফরের প্রধান লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তার কাছ থেকে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ গ্রহণ করা। তবে সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া বাংলাদেশের অর্থ ফেরত আনতে সহযোগিতা আদায় করা।
চার দিনের এ সফরে অধ্যাপক ইউনূস নানা কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় কাটান। সফরের প্রথম দিনেই তিনি কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বোচওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মহাসচিব বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কার ও আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে সহায়তার আগ্রহ জানান।
এছাড়া এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্শ, যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সদস্যরা, ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ও বোর্ড অব ট্রেডের প্রেসিডেন্ট জনাথন রেনল্ডস এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েল তার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাপচারিতা’ অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেন। সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন ছিল বৃহস্পতিবার সেন্ট জেমস প্যালেসে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ এবং রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক, যেখানে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়।
একই দিন বিকেলে তিনি হাউস অব কমন্সের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরদিন শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংস্কার ও গণহত্যার বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে আগামী রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছানো হয়।
এছাড়া, লন্ডনে জরিপ জাহাজ এইচএমএস এন্টারপ্রাইজ সংক্রান্ত একটি ব্রিফিংয়ে অংশ নেন অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় অ্যাডমিরাল ডেপুটি জেরেমি চার্চার ও কমোডর হোয়্যালি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য কেনা জাহাজটির বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সফরের শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনেও অংশগ্রহণ করেন তিনি।
চার দিনের এই সফরে ব্রিটিশ রাজপরিবার, সরকার, বেসরকারি খাত এবং শিক্ষাক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে নতুন মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: