আজ মুসলিম উম্মাহ উদযাপন করছে পবিত্র ঈদুল আজহা—ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের এক অনন্য দৃষ্টান্তের দিন।
ঈদুল আজহার মূল শিক্ষা আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আত্মা ও সমাজকে পরিশুদ্ধ করা।
কুরবানির ইতিহাস ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইবরাহিম (আ.) তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি করতে উদ্যত হন।
তবে আল্লাহতায়ালা মানব রক্তপাত চান না—তাই তিনি তা বন্ধ করে পশু কুরবানির বিধান দেন।
কুরআনে বলা হয়েছে, “তুমি তোমার স্বপ্নকে অবশ্যই পূর্ণ করেছ” (সুরা সাফফাত: ১০৫)। এই কুরবানি শুধুই একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, এটি আমাদের তাকওয়া ও আত্মোৎসর্গের প্রতীক।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর এ মহান ত্যাগের আদর্শ অনুসরণ করেই প্রতি বছর ১০ জিলহজ তারিখে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কুরবানি করে থাকেন। এটি শুধু পশু জবাই নয়, বরং নিজের ভেতরের পশুত্ব, অহংকার ও স্বার্থপরতাকে বলি দেওয়ার প্রতীক। কুরআনে বলা হয়েছে, “তাদের মাংস ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া” (সুরা হাজ্জ: ৩৭)।
কুরবানিকে ঘিরে মাঝে মাঝে কিছু ব্যক্তি একে ‘নৃশংসতা’ বা ‘সম্পদের অপচয়’ হিসেবে অভিহিত করেন। তবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি শুধুমাত্র প্রাণী জবাই নয়, বরং স্রষ্টার আদেশ পালনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির চর্চা।
ইসলামের মতে, গবাদিপশু খাওয়া ও কুরবানি বৈধ, আর এগুলোর মধ্যে আল্লাহ বরকত রেখেছেন বলেই প্রতিনিয়ত জবাইয়ের পরও এদের প্রজাতি বিলুপ্ত হয় না।
এই মহত্ কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মুসলমানের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
লোক দেখানো বা প্রতিযোগিতার মনোভাব কুরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্যকে নষ্ট করে দেয়। ঈদুল আজহার মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের আত্মত্যাগ ও খোদাভীতির মূল্যবোধকে নতুন করে জাগ্রত করেন।
আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের কুরবানি কবুল করে নেন এবং আমাদের জীবনে তাকওয়ার সত্যিকার রূপ প্রতিফলিত করেন—এই দোয়াই সকলের জন্য রইল। ঈদ মোবারক।
এসআর
মন্তব্য করুন: