[email protected] শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নেবে জাপান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৫ ৩:৪২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

ক্রমবর্ধমান শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে জাপান।

টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে জাপানি সরকার ও উদ্যোক্তারা এই ঘোষণা দেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “জাপানে বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। এটি শুধু কর্মসংস্থানের নয়, বরং জাপানকে জানার ও অভিজ্ঞতা অর্জনের দ্বারও উন্মোচন করবে।”

অনুষ্ঠানে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়।

  • প্রথমটি স্বাক্ষরিত হয় বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) এবং জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে।
  • দ্বিতীয়টি হয় বিএমইটি, জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (যেটি ৬৫টির বেশি জাপানি কোম্পানির ফেডারেশন), এবং জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সির (জেবিবিআরএ) মধ্যে।

ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ ১৮ কোটির বেশি মানুষের দেশ, যাদের অর্ধেকের বয়স ২৭ বছরের নিচে। এই তরুণ জনশক্তিকে বিশ্ববাজারে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।”

জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, “বাংলাদেশি কর্মীদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের প্রতিভা লালন করা আমাদের দায়িত্ব।”

ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি) চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “আমরা আগামী পাঁচ বছরে এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তারা জাপানের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর ১৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, এবং এই সংখ্যা ৩০০০-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন যুবকরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে।”

জেইটিসিও (জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন)-এর চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি বলেন, “বাংলাদেশি শ্রমিকদের সম্ভাবনা অনেক, তবে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে, যা দ্রুত সমাধান জরুরি।”

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, “জাপানে জনসংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা এই ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, “২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট ১ কোটি ১০ লাখে পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করতে পারে।”

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর