প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুনরায় আশ্বস্ত করেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কারমূলক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বুধবার (২৮ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন তিনি।
চার দিনের সরকারি সফরে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। সফরকালে তিনি নিক্কেই ফোরামে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
সাক্ষাৎকালে তারো আসো বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান এবং একটি সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য নির্বাচন আয়োজনের ওপর জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে— প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, খুনিদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
তিনি আরও জানান, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন, এবং ঋণ পরিশোধে সফলতা অর্জনের মাধ্যমে সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, “পূর্ববর্তী সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, যার ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সেই তরুণরাই আমাকে এই বিশৃঙ্খলা নিরসনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।”
জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “গত দশ মাসে জাপান আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ সফর এক অর্থে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সফর।”
সাক্ষাতে তিনি তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি নিজ চোখে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পারেন।
সাক্ষাতের সময় উপস্থিত জাপানি সংসদ সদস্যরা বলেন, ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষর হলে তা বাংলাদেশে বৃহৎ জাপানি বিনিয়োগের পথ খুলে দেবে। বাংলাদেশ আগস্টের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন করে সেপ্টেম্বর মাসে ইপিএ স্বাক্ষরের আশা করছে। ইপিএ স্বাক্ষরিত হলে, জাপান হবে এ ধরনের চুক্তিতে বাংলাদেশের প্রথম অংশীদার।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি জানান, “রোহিঙ্গা সংকট অন্যান্য শরণার্থী সংকট থেকে আলাদা, কারণ তারা অন্য দেশে যেতে চান না—তারা নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরতে চান।” তিনি এই বিষয়ে জাপানের সহায়তা কামনা করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
এসআর
মন্তব্য করুন: