স্বচ্ছ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত সাংবাদিকদের শিগগিরই অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী গণমাধ্যমের হালচাল” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “আগামীতে আর কেউ তদবির করে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিতে পারবে না। সংসদ সদস্য বা ছাত্রনেতাদের সুপারিশে কার্ড দেওয়ার সেই পুরনো প্রক্রিয়া বন্ধ করা হবে। প্রকৃত সাংবাদিকদের পরিচয় যাচাই করে স্বচ্ছভাবে কার্ড দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের পর করা ২৬৬টি হত্যা মামলার বিষয়ে সরকার অবগত নয়—কারা কেন মামলা করেছেন, তা জানা নেই। এই মামলা নিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি বা গ্রেপ্তারের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং তারা নিয়মিত কাজ করছেন।”
প্রেস সচিব বলেন, “গণমাধ্যমকে আগের ভুলগুলো স্বীকার করে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে হবে। সরকার সাংবাদিকদের নিরাপদভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা দিতে চায়। এখন প্রয়োজন গণমাধ্যমের জন্য একটি নতুন সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট ও অর্থনৈতিক মডেল, যা সাংবাদিকদের কপিরাইট ও বেতন সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে।”
তিনি দাবি করেন, “গত ৯ মাসে গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। কিছু সাংবাদিক মালিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থে চাকরি হারালেও এতে সরকারের দায় নেই। বরং সরকার চায়, মিডিয়া সত্য বলুক, স্বাধীন হোক এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাক। সরকার কোনো সংবাদমাধ্যম বন্ধ করেনি, বরং আগে ব্লক করা ‘নেত্র নিউজ’-এর মতো অনলাইন সাইটগুলো খুলে দিয়েছে।”
সাংবাদিকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্ন দেশে যেমন গাইডলাইন থাকে, তেমনিভাবে আমাদের এখানেও প্রতিটি পত্রিকার জন্য সাংবাদিকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নির্দেশিকা থাকা উচিত। কেউ কেউ ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য দিলেও কেবল আদর্শগত কারণে কাউকে মত প্রকাশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে না।”
অনুষ্ঠানে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, “গণমাধ্যমের সহায়তা ছাড়া ফ্যাসিবাদ কায়েম সম্ভব হতো না। গণমাধ্যমের সংস্কার এখন জরুরি। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’ সংগঠনের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন শিশির। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুখপাত্র প্লাবন তারিক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক একরামুল হক সায়েমসহ অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরা।
এসআর
মন্তব্য করুন: