বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এর আগে সকালে বিদেশি একটি সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, "যখন দেখবেন আকাশে সূর্য উঠেছে, তখন সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন।" তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশের পর কমিশন আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল বা সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে পারবে। একইসঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং সংশ্লিষ্ট সাক্ষী ও বাদীদের সুরক্ষার জন্য আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম, বিশেষ করে সাইবার স্পেসে উপস্থিতি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রোববার রাতে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অগ্রসর হয়। সিইসি জানিয়েছেন, গেজেট হাতে পাওয়ার পর নিবন্ধন সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা এবং চলমান বিচারিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল।"
এসআর
মন্তব্য করুন: