[email protected] বুধবার, ২১ মে ২০২৫
৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ: কী বলা আছে প্রজ্ঞাপনে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫ ৮:১৭ পিএম

ফাইল  ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

সোমবার বিকেলে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ সারা দেশে ভিন্নমতাবলম্বী, বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, ধর্ষণসহ নানা নিপীড়ন চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুম, খুন, পুড়িয়ে হত্যা, বেআইনি আটক, লুণ্ঠন, গণহত্যা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল—যার সুস্পষ্ট প্রমাণ দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়, এসব অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ এবং এর সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর বহু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় দলটি এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলো বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, বিচারপ্রার্থীদের ভীতি প্রদর্শন করছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, গত ৫ আগস্টের পর দলটির নেতাকর্মীরা উসকানিমূলক মিছিল, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পলাতক নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানসহ নানা আইনশৃঙ্খলাবিরোধী তৎপরতায় জড়িয়েছে। এতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

সরকারের কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো কাজ করছে এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ ও ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর ধারা ১৮(১)-এর অধীনে দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কোনো ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন, প্রচারণা কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণআন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১০ মে রাতে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠক শেষে সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর