সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এমনটাই নিশ্চিত করেছে টাস্কফোর্সের সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদন।
হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় দুজন অপরাধী, যাদের পরিচয় এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি ডিএনএ নমুনার অস্পষ্টতার কারণে।
শনিবার (৩ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাস্কফোর্সের প্রধান ও পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল। তিনি জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এ পর্যন্ত যেসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, তার বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে প্রথমে সাগর ও পরে রুনিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় তাদের ছেলে মেঘ একই খাটে ঘুমিয়ে ছিল। হত্যাকাণ্ডে রান্নাঘরে থাকা ছুরি ও বটি ব্যবহার করা হয়।
ভিসেরা রিপোর্টে চেতনানাশক বা বিষাক্ত কোনো উপাদান না পাওয়ায় জানা গেছে, তাদের অচেতন করে হত্যা করা হয়নি। সাগরের হাত-পা বাঁধা থাকলেও রুনির ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। হত্যার আগে কিংবা পরেও তারা কিছু সময় জীবিত ছিলেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
টাস্কফোর্সের মতে, ঘটনাস্থলে গণমাধ্যম কর্মী ও স্থানীয়দের চলাচলের কারণে বহু আলামত নষ্ট হয়ে যায়। তবে রান্নাঘরের বারান্দায় সাড়ে ১৪ ও সাড়ে ৮ ইঞ্চির একটি ভাঙা অংশ পাওয়া যায়, যা ছিল সম্পূর্ণ নতুন। সেটির মাধ্যমে বাইরে থেকে কেউ ভেতরে প্রবেশ করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডিএনএ বিশ্লেষণে আরও জানা যায়, নমুনায় পাঁচ থেকে ছয়জনের ডিএনএ উপস্থিত থাকায় নির্দিষ্ট করে কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যদিও একসঙ্গে দুই বা তিনজনের ডিএনএ থাকলে তা শনাক্ত করা সম্ভব হতো।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার (মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক) ও মেহেরুন রুনি (এটিএন বাংলার রিপোর্টার)।
তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা ও অগ্রগতির অভাবে হাইকোর্ট ২০২3 সালের ৩০ সেপ্টেম্বর র্যাবের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব সরিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত নতুন টাস্কফোর্সকে দায়িত্ব দেয়। যদিও তদন্ত সম্পন্ন করতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল, এখনও তা শেষ হয়নি।
নতুন তদন্তে এ পর্যন্ত ৭ জন সাংবাদিকসহ মোট ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: