“নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান”—এই প্রত্যয়কে ধারণ করে আয়োজন করা হয়েছিল এবারের ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা ঘুরে ফিরে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। বর্ণিল আয়োজনে মুখর হয়ে ওঠে চারুকলা প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা। ছিল মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বিশালাকৃতির বাঘ, পাখি, মাছ এবং নানান শিল্পকর্ম, যার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় গ্রামীণ জীবনের ছোঁয়া এবং প্রকৃতিনির্ভর মানুষের সংগ্রামী রূপ। এবারের আয়োজনে বিশেষভাবে জায়গা করে নিয়েছে বিশাল আকারের শেখ হাসিনার মুখাকৃতি এবং ‘পানি লাগবে পানি’ থিমে তৈরি শিল্পকর্ম।
চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী, নানা বয়সী মানুষ এমনকি বিদেশি নাগরিকরাও যোগ দেন এই শোভাযাত্রায়। চারুকলার সামনে থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড়, টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি হয়ে আবার চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চারুকলা এলাকা ছিল উৎসবের রঙে রাঙানো। ভোরের আলো ফোটার আগেই মানুষের ঢল নেমেছে চারদিকে। রাজধানীর রমনা, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে নববর্ষের আনন্দ।
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনের ছায়ায় থাকা মানুষের জন্য এই বর্ষবরণ যেন মুক্তির এক নিঃশ্বাস। এবারকার নববর্ষ এসেছে স্বাধীন পরিবেশে, মুক্ত বাতাসে। ফ্যাসিবাদের কঠিন পর্দা সরিয়ে এক নতুন সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসব। পেছনে ফেলে বাংলা ১৪৩১-এর সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার দিনগুলো, মানুষ আজ নতুন আশায় পা রাখছে বাংলা ১৪৩২-এ।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ আজ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে প্রাণভরে। বাংলার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ, বাঙালির প্রাণের উৎসব নতুন করে ছুঁয়ে গেছে হৃদয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: