বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য চারুকলায় তৈরি করা ফ্যাসিবাদের প্রতীকী মুখাকৃতি এবং শান্তির প্রতীক পায়রার মোটিফে আগুন লেগেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি সম্পূর্ণভাবে এবং শান্তির পায়রার মোটিফ আংশিক পুড়ে গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, “আমরা ধারণা করছি, ভোর ৪টা ৪৫ থেকে ৫টার মধ্যে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
ঘটনাস্থলে সরেজমিনে দেখা গেছে, আগুনে মোটিফের কাপড় ঘেরা অংশগুলোর একটি বড় অংশ ছাই হয়ে গেছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোভাযাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, চারুকলার ভেতরে থাকা মুখাকৃতি ও মোটিফগুলো ছিল চার দেয়ালের ঘেরাটোপে। তবে রাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না প্রক্টরিয়াল টিমের কেউ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাতে মাত্র চারজন প্রক্টরিয়াল সদস্য দায়িত্বে থাকলেও শোভাযাত্রার এলাকায় তারা উপস্থিত ছিলেন না। পুলিশ ছিল গেটের বাইরে।
এ ছাড়া রাত ৮টার পর প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদস্য জানান, কোনো সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা পরিকল্পনা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পকর্মগুলো রাখা হয়েছিল।
গোয়েন্দা সূত্র দাবি করেছে, শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছিল—ফ্যাসিস্ট সহযোগীদের দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটতে পারে।
তারপরও নিরাপত্তা জোরদার না করায় আক্ষেপ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা এসআই তারক কুমার হালদার এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, “ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলে পরে জানাবো।”
শোভাযাত্রার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখার চেষ্টা করছি।
তবে ক্যামেরার পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ফুটেজ দেখা সম্ভব হয়নি।
বিকল্প উপায়ে তা খোলার চেষ্টা চলছে।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সদস্য নামাজে ছিলেন এবং দায়িত্বে থাকা দারোয়ান ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন দিয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: