রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে না কেন—এ বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সংক্রান্ত বিধান রয়েছে।
সোমবার (তারিখ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে এ রুল দেন। একইসঙ্গে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে নীতিমালা না থাকা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী বলে কেন একে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু এই ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বিষয়টি নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।
হাইকোর্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছেন।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা করার ক্ষমতা রাখেন। তবে অতীতে এই ক্ষমতা প্রয়োগের ফলে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুক্তি পেয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হত্যা মামলার আসামি।
তিনি আরও বলেন, এই ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কী কী দিক বিবেচনা করা হয় এবং কীসের ভিত্তিতে ক্ষমা দেওয়া হয়—এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। ফলে এই ক্ষমতার অপব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। অতীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষমা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে, যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
তাই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা যায়। এ কারণেই জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করা হয়েছে, বলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।
আদালতের রুলের পর এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবের অপেক্ষা। চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারের জবাব পাওয়া গেলে, এই বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে কি না—সে বিষয়ে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
এসআর
মন্তব্য করুন: