প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুবারের বেশি হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন ৬৪ শতাংশ মানুষ, তবে ১০ শতাংশ এর বেশি মানুষ মনে করেন এটি বাড়ানো যেতে পারে।
১৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মেয়াদ নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা দেখেন না।
এছাড়া, ৪৯% মানুষ মনে করেন একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের প্রধানও থাকা উচিত নয়, যেখানে ৩৭% এর মত ভিন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৬ শতাংশ মানুষ।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের জরিপ
সংবিধান সংস্কার কমিশন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই জরিপ পরিচালনা করে। ৬৪ জেলার ৪৫,৯২৫টি পরিবারের ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী মানুষের মতামত এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জরিপ অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে মাত্র ৬% মানুষ, আর নির্দলীয় ব্যবস্থার বিষয়ে জানেন না বা মত দেননি ৮% এর বেশি।
রাষ্ট্রপতির হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৩৭% অংশগ্রহণকারী, যেখানে ৪৫% ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতেই রাখা উচিত বলে মনে করেন। সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৮% মানুষ, আর চার বছরের পক্ষে ছিলেন ১৬%।
নির্বাচন পদ্ধতি ও সংসদ সংস্কার
সংসদ গঠনের ক্ষেত্রে বর্তমান ব্যবস্থাকেই সমর্থন করেছেন ৭৮% মানুষ, যেখানে রাজনৈতিক দলের আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে সংসদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে ৯% এর কম।
সংসদকে উচ্চ ও নিম্নকক্ষে বিভক্ত করার পক্ষে ৩৫% মানুষ, ৩৯% বিপক্ষে এবং ২৩% কোনো মত দেননি। দলীয় হুইপের বাধ্যবাধকতা না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৩% মানুষ। সংবিধান সংশোধনসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮২%।
গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘু অধিকার
নারী সংরক্ষিত আসনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৫% মানুষ, যদিও বর্তমান সংরক্ষিত ৫০ আসনে সরাসরি ভোট হয় না। সংখ্যালঘুদের অধিকার, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার সাংবিধানিক বিধানের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯১% মানুষ।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন ৫৩%, যেখানে ৪৩% সাংবিধানিক বিধিনিষেধের পক্ষে। সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা সীমিত করার ক্ষমতা সংবিধানে থাকা উচিত বলে মত দিয়েছেন ৬১%, আর ২৯% একে অপ্রয়োজনীয় মনে করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরার পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোকে তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।
তবে ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পর থেকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিতর্ক তৈরি হয়।
২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলে, হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনীর দুটি ধারা বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় দেয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: