[email protected] শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
৫ বৈশাখ ১৪৩২

জাতিসংঘের প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে অকাট্য দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হবে: চিফ প্রসিকিউটর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৪:২৫ পিএম

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অকাট্য দলিল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনার একটি তথ্যানুসন্ধানী দল গঠন করে এই তদন্ত করেছে। গতকাল প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনার সরকার বিক্ষোভ দমন করতে নৃশংস ও পদ্ধতিগতভাবে পদক্ষেপ নিয়েছিল।

প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জন্য একটি শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, “অস্ত্রের ব্যবহার এবং আহত-নিহতের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, একটি রাষ্ট্রযন্ত্র পরিকল্পিতভাবে একটি জনগণের ওপর আক্রমণ করেছে তাদের নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ।”

তিনি আরও বলেন, “জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য সংস্থা, তাই এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং কোনো রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত।” তাজুল ইসলাম উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের তদন্তকারীরা অপরাধীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থানগুলোতে যথাযথ তদন্ত পরিচালনা করেছেন। তাই, এই প্রতিবেদনটি আদালতে একটি অকাট্য দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে।

এছাড়া, তিনি তৎকালীন সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, “তৎকালীন সরকারের কর্তৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল।” জাতিসংঘের তদন্ত দল প্রত্যেক জড়িত কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে, যাতে তাদের বিরুদ্ধে ন্যায্য ও নিরপেক্ষ বিচার হতে পারে, এবং চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ও এই সুপারিশের প্রতি সম্মতি জানিয়েছে।

এদিকে, চিফ প্রসিকিউটর জাতিসংঘের উদ্বেগের বিষয়ে জানান যে, "জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং একটি ‘মরেটোরিয়াম’ (স্থগিতাদেশ) জারি করার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও আমাদের ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের কাছে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, তবে তারা যে দণ্ড দেবেন, তা পরে দেখা যাবে।”

এভাবে, জাতিসংঘের প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর