ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর এক অপকর্মের অভিযোগ ওঠে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গোপন কারাগারে শিশুদেরও আটক রাখতেন এবং তাদেরকে মায়ের দুধ পান করতে দেওয়া হতো না। এসব শিশুদের বন্দি অবস্থায় মা-বাবার ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে ব্যবহার করা হতো।
সম্প্রতি জোরপূর্বক গুমের তদন্তকারী একটি কমিশন এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের তদন্তে জানা যায়, শেখ হাসিনার আমলে গোপন কারাগারে বন্দি শত শত ব্যক্তির মধ্যে বেশ কিছু শিশু ছিল। এসব শিশুদের মধ্যে কিছু শিশুকে তাদের মায়ের সঙ্গে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয় এবং তাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসে।
কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ছয়টি শিশু তাদের মায়েদের সঙ্গে কারাগারে বন্দি ছিল, এবং তাদের দুধ পান করতে না দেওয়ার মতো নৃশংসতা ঘটানো হয়েছে। এসব শিশুকে তাদের মা-বাবার প্রতি মানসিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহার করা হতো।
এই ঘটনা ঘটেছে ২০২৩ সালেও, যখন এক গর্ভবতী নারীকে তার ছোট সন্তানসহ আটক করা হয় এবং আটক কেন্দ্রে তাকে মারধরের শিকার হতে হয়। কমিশনের তদন্তে এমন আরও ঘটনার বিশদ বিবরণ পাওয়া গেছে, যেখানে নারীদের ও তাদের সন্তানদের নিখোঁজ করা হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, তিনি শিশু বয়সে তার মায়ের সঙ্গে গোপন কারাগারে বন্দি ছিলেন, এবং তার মা আর কখনো ফিরে আসেননি। অন্য একটি ঘটনায়, এক দম্পতি ও তাদের শিশুকে আটক করা হয় এবং শিশুটিকে মানসিক নির্যাতনের অংশ হিসেবে মায়ের দুধ খেতে দেওয়া হয়নি।
হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করা হয়েছে, তবে তদন্ত কমিশন এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কমান্ডারদের দায়ী করার সুপারিশ করব। এসব ঘটনার কারণে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দীর্ঘদিনের মানসিক, আইনি এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: