গণহত্যাকারীরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে: ড. বদিউল আলম

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকারীরা আবার ক্ষমতায় আসুক, এমনটি দেশের অধিকাংশ জনগণ চান না।

তিনি আরও বলেন, গণহত্যাকারীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার জন্য কমিশন সুপারিশ করেছে।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত আরএফইডি টক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন পরবর্তী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী অনিয়মে সহায়তাকারী এবং গত তিনটি নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিশনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশন গঠনেরও সুপারিশ করেছে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, গত জুলাই-আগস্ট মাসের আন্দোলনে প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। এর পাশাপাশি বিগত ১৬ বছরে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতায় ঘটেছে। তার মতে, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের প্রশ্নটি সমাজে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, কমিশনের উদ্দেশ্য কাউকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বাধা দেয়া নয়, বরং যারা অন্যায় করেছেন তাদের বিচারের আওতায় আনা।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে কারচুপিতে সহায়তাকারীদের বিচার করা উচিত এবং যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে অন্যায় করেছেন, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি জানান, অতীতের অনিয়ম এবারের নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি না হয়, এমনটাই জনগণের আশা।

এ সময় তিনি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে আরও কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন, যেমন: নির্দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন, ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির লেজুড়বৃত্তিক কার্যক্রম বন্ধ করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শাখা নিষিদ্ধ করা। তিনি বলেন, দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতন্ত্র সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, প্রার্থীরা যাতে ভোটের প্রচারণায় কোনো পোস্টার ব্যবহার করতে না পারে এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দেয়া নিশ্চিত করতে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এভাবে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে কমিশনের বিভিন্ন সুপারিশ জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, যা আগামী নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও ন্যায্য করার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।