চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা বন্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে আর 'টম অ্যান্ড জেরি' খেলা চলবে না। আমি আসব, পাহাড় কাটা বন্ধ হবে, তারপর আবারও পাহাড় কাটা হবে—এটি চলতে পারে না। রাতের বেলা পাহাড় কাটলে, রাতেই পাহাড় পাহারা দেবেন। এটা আপনার দায়িত্ব, এটি সরকারের আইন।’’
রোববার সকালে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে পলিথিনবিরোধী এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারী সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করে না। তারা সর্বদা প্রজাতন্ত্রের সেবায় থাকতে হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হলে মালিকদের নাম তালিকাভুক্ত করতে হবে। যদি দুইটা মালিককে গ্রেফতার করা যায়, তাহলে পাহাড় কাটা বন্ধ হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গাছ কাটলে গাছ লাগানো যায়, তবে পাহাড় কেটে পাহাড় তৈরি করার কোনো জাদু নেই। তাই পাহাড় কাটতে দেওয়া যাবে না।’’
পলিথিন ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত কাঁচাবাজারে যাচ্ছি এবং বিকল্প ব্যাগ ব্যবহার করছি। এবার আমাদের কঠোরভাবে রাস্তায় নামতে হবে। পলিথিন বন্ধ করতে না পারলে আমার সমালোচনা হবে, তবে প্রশ্ন হলো—আপনি কী করছেন?’’ তিনি বলেন, ‘‘পলিথিন শপিংব্যাগ নিষিদ্ধ করা ২০০২ সালে শুরু হয়েছিল, কিন্তু ২০২৫ সালে এসে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে—এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। পলিথিন ব্যবসায়ীরা বিকল্পের কথা বললেও, আমাদের কাছে বিকল্প রয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘পলিথিন কারখানা বন্ধ করতে গেলে বাধা আসবে, তবে আমরা সেই বাধা মোকাবেলা করেই তা বন্ধ করব। গত সপ্তাহে আমরা কামরাঙ্গীরচরে একটি পলিথিন কারখানা বন্ধ করেছি এবং ধীরে ধীরে সব জায়গায় এই অভিযান চালানো হবে।’’
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সভায় বলেন, ‘‘পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে, এগুলোর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। ২০০৫ সালে যেভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, ঠিক একইভাবে কারখানা ও বিপণন স্থানে আইন প্রয়োগ করা হলে সুফল পাওয়া যাবে।’’
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আহসান হাবিব পলাশ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির এবং প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নগরীর কাজির দেউড়ি বাজারে পলিথিনবিরোধী প্রচারণায় অংশ নেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: