বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে শেখ হাসিনার কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া এবং সেটির তথ্য গোপন করার অভিযোগে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি লন্ডনে তার ব্যবহার করা সম্পত্তিগুলোর তদন্ত করা উচিত।
প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, "টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবার শেখ হাসিনার শাসনামলে যে সম্পত্তি উপভোগ করেছেন, সে জন্য তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।" তিনি আরও বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের যেসব সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলোরও তদন্ত হওয়া উচিত। "যদি প্রমাণিত হয় যে এসব সম্পত্তি 'ডাকাতির মাধ্যমে' অর্জিত, তবে সেগুলি ফেরত দেওয়া উচিত," যোগ করেন তিনি।
ড. ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি ব্রিটিশ সরকারের ট্রেজারি ও সিটি মিনিস্টার হিসেবে আর্থিক দুর্নীতি মোকাবিলার দায়িত্বে আছেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। "অর্থাৎ, সেই ব্যক্তি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে নিজেই দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি," বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সানডে টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি বাড়িতে বাস করছেন, যা দুটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কিনেছিলেন। যদিও এ ধরনের আর্থিক অস্বচ্ছতা নিয়ে তিনি কখনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
এছাড়া, ২০১০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পারমাণবিক শক্তি চুক্তি সম্পর্কেও টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে, যেখানে তিনি মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছেন। এই অভিযোগগুলো তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), তবে টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
ড. ইউনূস আরও বলেন, "যদি সে (টিউলিপ) তখন বিষয়টি জানত না, এখন তাকে বলার সময় এসেছে—‘আমি জানতাম না, আমি দুঃখিত, এবং আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’ কিন্তু সেটা না করে তিনি এখন নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।"
এদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ টিউলিপ সিদ্দিককে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, "এখনই সময় টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার, কারণ তিনি নিজেই দুর্নীতির অভিযোগের শিকার হয়েছেন।"
কেমি ব্যাডেনোচ আরও বলেন, টিউলিপের সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনামলের যোগসূত্র নিয়ে বাংলাদেশে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে, যার কারণে তাকে পদত্যাগ করা উচিত।
এসআর
মন্তব্য করুন: