বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা দিতে যাচ্ছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।
ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন কমিশন জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রস্তাবনা জমা দেবে।
কমিশন ৫৪ হাজার মতামত এবং ১২০টি দেশের সংবিধান বিশ্লেষণ করে প্রস্তাবিত সংস্কার পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনাগুলো হলো:
১. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা।
২. টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার নিষেধাজ্ঞা।
৩. প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পৃথক করা।
৪. দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা।
৫. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন।
৬. ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নেওয়ার বিধান।
৭. স্পিকারের একক ক্ষমতা সীমিত করা।
৮. সংসদ সদস্য হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ থেকে কমিয়ে ২১ করা।
ড. আলী রীয়াজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "বিভিন্ন পক্ষের মতামত ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এই প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে এবং গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে।
ড. রীয়াজ আরও বলেন, "রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন।"
১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে, যা বিভিন্ন সময় একদলীয় শাসন এবং সামরিক শাসন বৈধ করতে ব্যবহার হয়েছে। ড. রীয়াজ জানান, কমিশন এসব সংশোধনীর প্রভাব মূল্যায়ন করে সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সুপারিশ করবে।
"গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা পূরণে অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে," বলেন ড. রীয়াজ। তিনি মনে করেন, কার্যকর সংস্কারের মাধ্যমে জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
সংসদ সদস্য হওয়ার বয়সসীমা ২৫ থেকে কমিয়ে ২১ বছরে নির্ধারণের প্রস্তাবও গুরুত্ব পেয়েছে।
এটি তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন কমিশন।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: