বছরের শুরুতে বই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা

নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই দেশের বেশিরভাগ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থী তাদের পাঠ্যবই পায়নি।

কিছু কিছু স্কুলে প্রাথমিকের কিছু বই পৌঁছালেও, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বই পায়নি। অনেক শিক্ষার্থী জানে না, কবে তারা বই পাবে, যার ফলে হতাশা তৈরি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ শুরুই হয়নি। মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে আগামী রোববার থেকে বই বিতরণ শুরু হবে, তবে এখানে প্রথম থেকে তৃতীয় ও দশম শ্রেণির কিছু বই এসেছে। রোববার থেকে বই বিতরণ শুরু হলেও সব শিক্ষার্থী বই পাবে না। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজেও বছরের প্রথম দিন থেকে বই বিতরণ শুরু হয়েছে, তবে ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ এবং ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পায়নি। অন্যদিকে ৮ম, ৯ম এবং ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পায় মাত্র তিনটি বই। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজেও বই বিতরণ শুরু হলেও ৪র্থ ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পেয়েছে, অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পায়নি।

মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা বলেন, "আমাদের স্কুলে এখনো বই বিতরণ শুরু হয়নি। শুনেছি, ৭ম শ্রেণির বই এখনও স্কুলে আসেনি। কবে বই পাব এবং কবে পড়াশোনা শুরু করব, তা নিয়ে চিন্তিত আছি।" মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জানান, "আমরা এখনো বই পাইনি। কয়েকটি শ্রেণিতে বই দেওয়া শুরু হয়েছে, তবে আমরা কবে পাব তা নিশ্চিত না। কয়েকদিন ধরে স্কুলে গিয়ে বই না পেয়ে হতাশা কাজ করছে।"

এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল হক দুলু বলেন, "শিক্ষাবর্ষের শুরুতে বই না পেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়, যার ফলে তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমে যায়। গত বছর নানা কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ছিল, তাই তাদের দ্রুত বই দিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে হবে।"

নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৪১ কোটি পাঠ্যবই প্রয়োজন, তবে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বই পায়নি। রাজনৈতিক পরিবর্তন, নতুন শিক্ষাক্রম, পুরোনো পাঠ্যবই পরিমার্জন, পাণ্ডুলিপি প্রস্তুতি ও পাঠ্যবই ছাপানোর বিলম্বের কারণে সব বই পৌঁছাতে মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানায়, বছরের প্রথম দিন সব শ্রেণির শিক্ষার্থীর হাতে অন্তত তিনটি বই (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তবে তা সম্ভব হয়নি। শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, বই বিতরণের পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং বই পেতে দেরি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।