[email protected] রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৫ পৌষ ১৪৩১

স্থানীয় নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট আয়োজনের দাবি জনপ্রতিনিধিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৫৮ এএম

ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট আয়োজনের প্রস্তাব জানিয়েছেন দেশের জনপ্রতিনিধিরা।

তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর জন্যও তারা প্রস্তুত। জনপ্রতিনিধিরা চাইছেন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো নির্দলীয় প্রার্থী নিয়ে অনুষ্ঠিত হোক এবং এ ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে, যেটি সংসদ নির্বাচনের আগে বা পরে আয়োজন করা যেতে পারে।

রোববার, জাতীয় সংসদে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব দাবি উত্থাপন করেন দেশের বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা unanimously দাবি করেছেন যে, নির্বাচন নির্দলীয় ভাবে এবং বর্তমান পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে হোক, এবং তারা সংসদীয় পদ্ধতিতে না গিয়ে স্থানীয় নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

প্রতিনিধিরা বলেন, তাদের দাবি, নারী প্রতিনিধিত্বের উন্নতির জন্য ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি অবলম্বন করা হোক এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও সব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এবং সংসদ সদস্যদের ভোট অধিকার নিশ্চিত করা হোক। এছাড়া, তারা সব সময় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন এবং প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর কথাও বলেছেন।

এছাড়া, তারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক নয়, বরং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগের ফলে স্থানীয় সরকারের প্রকৃত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।

এ বিষয়ে ড. বদিউল আলম মজুমদার জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, স্থানীয় সরকারে শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হয়। তারা সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি কর্মকর্তাদেরও নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে চান, যাতে সুষ্ঠু ও দক্ষ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, নির্বাচনের সময় রাতে ভোটগ্রহণ না করার, সংরক্ষিত নারী আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়। জনপ্রতিনিধিরা আরও প্রস্তাব করেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ক্ষমতায়ন, ভোটের সময় আঙুলের ছাপ নেওয়া, যাতে একাধিক ভোট প্রদান প্রতিরোধ করা যায়, এবং প্রবাসীদের জন্য ই-ভোটিং ব্যবস্থার সুযোগ দেওয়া।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল) বলেন, ‘‘আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ, যেখানে কমিশন কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা চাই, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হোক।’’

এছাড়া, জনপ্রতিনিধিরা পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পুনর্বহাল না করার এবং নির্বাচনী এলাকায় প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগের বিষয়েও মতামত জানিয়েছেন।

এ বৈঠকে নির্বাচন কমিশন তাদের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর