[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫
১৯ পৌষ ১৪৩১

হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের কথাই বলিয়ে নিতে চাইছে ভারত’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪:১৩ পিএম

ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালানোর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

 এর পর গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার এবং নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসকন এবং চিন্ময় দাসের বিতর্ক, যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে খবর প্রকাশ করে, এমনকি দাবি করা হয় যে, অনেক সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে। তবে ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি।

শেখ হাসিনা ভারত থেকে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিউজ টাইমের বর্ষীয়ান সাংবাদিক দীনেশ কে ভোরা। তিনি বলেন, “একটি বিদেশে আশ্রিত ব্যক্তির পক্ষে কিভাবে বিবৃতি দেওয়া সম্ভব? আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, কূটনৈতিক আশ্রয়ে থাকা কেউ সাধারণত বিবৃতি দিতে পারেন না। তবে শেখ হাসিনা সেই নিয়ম ভেঙে গেছেন।” ভোরার মতে, এই বক্তব্যগুলো আসলে ভারতের মোদি সরকারের শিখিয়ে দেওয়া কথা, এবং মোদি সরকার হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের কথাই বলিয়ে নিতে চাইছে।

ভোরা এই প্রবণতাকে ‘অগ্নিসংযোগের মতো’ এবং ‘আত্মঘাতী’ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি ভারত সরকারের পূর্বের নেপাল নীতির উদাহরণ টেনে বলেন, নেপাল সরকার ভারতকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার জন্য একাধিকবার পরামর্শ দিলেও ভারত তা না মেনে তাদের অখণ্ড মানচিত্রে নাক গলিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। এই পদক্ষেপের কারণে ভারত নেপালে ঘৃণার পাত্র হয়ে ওঠে এবং এর ফলস্বরূপ নেপালের প্রধানমন্ত্রী চীনপন্থি হয়ে ওঠেন।

এখন ভারতের মোদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গেও একই ভুল করছে বলে মন্তব্য করেন ভোরা। তিনি বলেন, “ভারত বার বার বাংলাদেশকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দিয়েছে, কিন্তু ভারত সে কথা শুনছে না।” বিশেষ করে, সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের ইসকন মন্দির জানিয়েছে যে, চিন্ময় দাস তাদের সদস্য নন, তারপরও ভারতের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

ভোরা মনে করেন, ভারতের এ ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ করতে পারে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে এখনই থামানো না হলে দু'দেশের সম্পর্ক আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে।” তিনি ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “মালদ্বীপ, নেপাল এবং ভুটানের মতো বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কেও ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছে মোদি সরকার।”

ভোরা অবশেষে বলেন, “ভারত নিজেকে বিশ্বগুরু প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে আসলে আগুন নিয়ে খেলছে, যা দীর্ঘমেয়াদে তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।”

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর