অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আওয়ামী লীগের যেসব সদস্য হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তবে যারা অপরাধে যুক্ত নন, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনব, তবে যারা নিরপরাধ তাদের অন্যদের মতোই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার থাকবে।”
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ঢাকার দেয়ালগুলোতে সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদায়ের চিত্র ফুটে উঠেছে।
এগুলোতে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের প্রতিফলন দেখা গেছে।
তিনি বলেন, “এই তরুণদের মস্তিষ্কে বিপুল আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য বড় একটি অর্জন।
ড. ইউনূস জানান, তাকে সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হলে প্রথমে তিনি তা এড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে পরে দেশের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে দায়িত্ব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন বলে তিনি উল্লেখ করেন। ড. ইউনূস দাবি করেন, “আগের সরকার একটি নিপীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থা চালু করেছিল।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ।”
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ড. ইউনূস আশাবাদী যে, তিনি এই বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত রাখতে চাই এবং সংকটে সহায়তার জন্য বিনামূল্যে কিছু চাই না, বরং একটি ব্যবসায়ী অংশীদার খুঁজছি।”
ড. ইউনূস জানিয়েছেন, তার সরকার ছয়টি ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রশাসন এবং জাতীয় সংবিধান।
তিনি বলেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে তারা কাজ করছেন।
তবে বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “এই সংস্কার কার্যক্রমে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচায়ক।”
ড. ইউনূস তার সরকারকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: