[email protected] রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৫ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ৮:৫১ পিএম

ফাইল  ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, "নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, আর এটি আর থামবে না।

এই ট্রেন সফলভাবে শেষ স্টেশনে পৌঁছাতে হলে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে, যা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে সম্ভব হবে।"

রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূস জানান, নির্বাচনের আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং একে একে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, "নির্বাচন কবে হবে—এটি সকলের মনে রয়েছে এবং আমাদেরও। আমরা নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে এবং তাদের ওপর নির্বাচন আয়োজনের সমস্ত দায়িত্ব বর্তাবে।"

ড. ইউনূস আরও জানান, "নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করবে, যা একটি অবাধ নির্বাচন পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, প্রবাসী বাংলাদেশিদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করাও সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "তবে, আমরা মনে করি না যে, একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার আমাদের সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার এবং আপনাদের দেওয়া ম্যান্ডেট অনুযায়ী আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।"

তিনি জানান, "আমরা প্রথম ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছি, যা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডের আপডেট বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। এসব কমিশন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছে, যেখানে জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারবেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, এই প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুন এবং আপনার মতামত তুলে ধরুন।"

ড. ইউনূস বলেন, "নির্বাচন সংস্কার কমিশন হচ্ছে প্রথম ৬টি কমিশনের মধ্যে একটি, এবং তাদের সুপারিশ নির্বাচন আয়োজনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, তাদের প্ল্যাটফর্মে গিয়ে আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে জানিয়ে দিন, কারণ আপনি দেশের মালিক। নির্বাচনের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের কথাও বলুন, কারণ সংস্কার ছাড়া জাতির উন্নতি সম্ভব নয়।"

তিনি আরও বলেন, "নির্বাচন আয়োজনে যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা অপরিহার্য, সেটি হচ্ছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। এর সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করা হবে এবং সমান্তরালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে।"

প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদী, "আমরা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। তবে, কিছু সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হওয়ার সুযোগের বিষয়ে নিশ্চিত নই। তবুও, আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সুযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করব।"

তিনি বলেন, "আমরা এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যা যুগযুগ ধরে অনুসরণযোগ্য হবে এবং আমাদের দেশকে রাজনৈতিক সংকট থেকে রক্ষা করবে। এজন্য নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে দ্রুতই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।"

ড. ইউনূস আরও বলেন, "এই অন্তর্বর্তী সরকার রাজনীতিকে নীতির কাঠামোতে আনার জন্য এবং নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় কাজ করছে। আমরা জাতিকে এই আকাঙ্ক্ষা থেকে বঞ্চিত করতে চাই না।"

তিনি শেষ করেন, "নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু হয়েছে এবং এটি থামবে না। তবে, এই ট্রেনের গন্তব্য নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। কিছু সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতে পারে, তবে নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা প্রস্তুত।"

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর