অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ১৫ বছরে সংঘটিত সব অপরাধের বিচার হবে।
কেবল জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নয়, এই সময়ের গুম, খুন ও অন্যান্য অপরাধের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে আমরা একটি গুম তদন্ত কমিশন গঠন করেছি। এখন পর্যন্ত ১,৬০০ গুমের তথ্য পাওয়া গেছে, যা ৩,৫০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “কমিশনের কাছে অভিযোগ করতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন, কারণ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্বারা আবার ক্ষতির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, কোনো ভয় না পেয়ে অভিযোগ জানান। আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছি। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধানের দেশত্যাগে দেশ একটি শূন্যতার মধ্যে পড়েছিল।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছিল। এখন আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে দেশ পুনর্গঠন করতে হবে।”
জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও গণহত্যার বিচার:
প্রধান উপদেষ্টা জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর সরকার একটি বিশৃঙ্খল দেশ পেয়েছে। স্বৈরশাসনের বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও জনগণের সঙ্গে পুনর্মিলিত করতে হচ্ছে।
বিপ্লবের সময় প্রায় দেড় হাজার মানুষ শহিদ হয়েছেন এবং ১৯,৯৩১ জন আহত হয়েছেন। সরকার প্রত্যেক শহিদের তথ্য সংগ্রহ করছে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার আমরা শুরু করেছি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।”
ড. ইউনূস জানান, গুম তদন্ত কমিশন অত্যন্ত মর্মান্তিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া বিবরণ হৃদয়বিদারক। তিনি বলেন, “এই অপরাধগুলোর বিচার করতেই হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের কেউ ছাড় পাবে না।”
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদে ২৪ জন সদস্য রয়েছেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: