পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের
করা আপিলের শুনানি আপাতত মুলতবি ঘোষণা করেছে আপিল বিভাগ। আপিলের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৫ মার্চ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির একটি আপিল বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত দেন। আদালতে রিটকারী পক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে বিভিন্ন আইনজীবী ও আইনগত প্রতিনিধি শুনানিতে অংশ নেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এতে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ করা হয়। এছাড়া সংবিধানে বিভিন্ন পরিবর্তন ও সংযোজন করা হয়।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু ধারা অবৈধ ঘোষণা করে। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির ধারা এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধারা বাতিল করা হয়। তবে সংশোধনীর পুরো অংশ বাতিল করা হয়নি। হাইকোর্ট গণতন্ত্রের গুরুত্ব এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপরিহার্যতা নিয়ে রায়ে উল্লেখ করে।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ধারা ৭ক, ৭খ এবং ৪৪(২) অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। ৭ক ও ৭খ ধারা সংবিধানের মৌলিক বিধান সংশোধন অযোগ্য করার বিষয় নির্দেশ করেছিল, আর ৪৪(২) ধারা হাইকোর্টের ক্ষমতার সীমা প্রসঙ্গে নির্দেশনা প্রদান করেছিল। এগুলো বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া গণভোট সংক্রান্ত বিধানও পুনর্বহাল করা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, দেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত। এই কাঠামোকে সুরক্ষিত রাখতে সংশোধনী ও আইন কার্যকর হতে হবে।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া ৩ নভেম্বর আপিল দায়ের করেন। এছাড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইনসানিয়াত বিপ্লব ও গণফোরামের আইনজীবীরা আপিলে অংশ নেন।
এদিন আদালতে রায়ের ঘোষণা সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে শুরু হয় এবং প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে চলে। আপিল মুলতবি হওয়ায় নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না।
এসআর
মন্তব্য করুন: