[email protected] রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৪০ এএম

বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা

আবারও ফিরে এসেছে। বহু বছর ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থাকা এ ব্যবস্থাটি বাতিলের বিষয়ে দেওয়া পূর্ববর্তী রায় আপিল বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ বলে রায় দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে পুনঃস্থাপন করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই যুগান্তকারী রায় দেন। বেঞ্চের অন্যান্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষ আইনজীবী ও সাংবাদিকে পরিপূর্ণ ছিল।

রায়ে বলা হয়েছে—ব্যবস্থা সংবিধানে ফেরত আসলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে, এবং চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কার্যকর হবে। সাত বিচারপতিই সর্বসম্মতভাবে রায় প্রদান করেন।

গত ২১ অক্টোবর থেকে টানা বেশ কয়েক দিন শুনানি শেষে ২০ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। রিটকারীদের পক্ষে ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জামায়াতের পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনিরসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানিতে অংশ নেন।

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তী সময়ে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হলে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয় ও ব্যবস্থাটিকে বৈধ ঘোষণা করে।

পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি মঞ্জুর হলে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। সেই রায়ের ধারাবাহিকতায় একই বছরের জুনে সংসদ পাস করে পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ ঘটে।

সম্প্রতি সরকার পরিবর্তনের পর সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং আরও কয়েকজন ব্যক্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। আপিল বিভাগ এসব আবেদনে শুনানি গ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত পূর্ববর্তী রায় সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল ঘোষণা করে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর