[email protected] বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৫১ এএম

জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের

মামলায় আজ ঘোষণা করা হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রায়। ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জড়ো হয়েছেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদসংস্থার প্রতিনিধি।

রয়টার্স, এপি, এএফপি, আল জাজিরা, বিবিসি ওয়ার্ল্ডসহ আন্তর্জাতিক বহু গণমাধ্যম রায়ের মুহূর্ত সরাসরি কাভার করতে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাসউদুর রহমান জানান—বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো পূর্বতন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে বলেই বৈশ্বিক নজর আজ ট্রাইব্যুনালে আটকে আছে। জানা গেছে, রয়টার্স পুরো বিচার প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করবে। এদিকে রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্টসংলগ্ন এলাকায় কয়েক স্তরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সক্রিয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রবিবার রাত থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনের দিকে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের চলাচলও সীমিত রাখা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলায় ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। এরপর ৯ কার্যদিবস ধরে চলে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তি। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্যসহ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাদের যুক্তিখণ্ডন পেশ করেন। এরপরই রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা ও আসামি কামালের সর্বোচ্চ দণ্ড দাবি করেছে। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় তৃতীয় আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ অবশ্য খালাসের আবেদন করেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের মতে—হাসিনা ও কামালও খালাস পাওয়ার যোগ্য।

এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা। মামলার পূর্ণাঙ্গ অভিযোগপত্রের পরিমাণ ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা; যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি ৪,০০৫ পৃষ্ঠা, আর শহীদদের তালিকা ২,৭২৪ পৃষ্ঠা। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর